
ছাতক প্রতিনিধিঃসুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের মৌলা অস্থায়ী কাঠের সেতু পার হতে গিয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে একই স্থানে দূর্ঘটনার কবলে পড়ে আরও দু’জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা এখানে জরুরী ভিত্তিতে সেতু নির্মাণের জোর দাবী জানিয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মৌলা সেতু পার হতে গিয়ে জয়নাল আবেদীন (৪০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্যামারগাঁও গ্রামের রইছ আলীর ছেলে।
দুর্বল কাঠের সেতু এখন এলাকাবাসীর আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এখানে জরুরী ভিত্তিতে সেতু নির্মানের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নিহত জয়নাল আবেদিনের শ্যালক শাহজাহান মিয়া বলেন, তিনি তার ছোট ভাইকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ছাতকে বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। সেতুটি পার হবার সময় দুজনেই নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নালকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ভাই আয়নাল মিয়া বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে মৌলা এলাকার পুরনো পাকা সেতুটি হঠাৎ ভেঙে পড়লে এলাকাবাসীর চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সরকারি তহবিল থেকে জরুরি ভিত্তিতে দেড় লাখ টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে সেই বরাদ্দে নামমাত্র কাজ করে বিল উত্তোলন করা হয়। একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু নির্মান করা হলেও যা শুরু থেকেই নড়বড়ে অবস্থায় ছিলো। এরপরও বাধ্য হয়ে প্রতিদিন ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার দুটি ইউনিয়নের কয়েক শতাধিক জনসাধারন এই পথেই যাতায়াত করছেন। বন্দেরগাঁও গ্রামের ইসলাম উদ্দিন, সিঙ্গেরকাছ গ্রামের আশ্রব আলী বাসিন্দা ও স্থানীয় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক বোরহান মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মৌলা অস্থায়ী কাঠের সেতু এলাকায় এ সেতুটি ভেঙ্গে পড়েছে প্রায় এক বছর পূর্বে।
এখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণ না করায় প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটছে। শুক্রবার রাতে দূর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু হলো, এর দায় কারা নেবে ? অস্থায়ী সেতু নির্মাণকারী তোফায়েল আহমদ বিপন তার বিরুদ্ধে কাজের অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় লোকজন ও মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য মাত্র এক লাখ ২৬ হাজার টাকার বরাদ্দ পেয়েছিলাম। এখানে পর্যাপ্ত বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি সেতু তৈরী করা হয়েছে। এবিষয়ে নোয়ারাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আব্দুল খালিক পীর বলেন, মৌলার সেতু এলাকায় কয়েকটি দূর্ঘটনা ঘটেছে। এবিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হবে। উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, জোড়াপানি-নরসিংপুর সড়কে প্রতিদিনই অসংখ্য লোকজন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রক্কলন তৈরী করে ইতিমধ্যেই এলজিইডি সদর দপ্তারে পাঠানো হয়েছে। এটির অনুমোদন পেলে দ্রুত দরপত্র আহবান করা হবে।