
রাইজিংসিলেট- দেশজুড়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ভাইরাসের ধরণ বদলে আরও আক্রমণাত্মক রূপ নিচ্ছে। আক্রান্তদের অনেকের অবস্থা অল্প সময়েই জটিল হয়ে পড়ছে—কারও শ্বাসকষ্ট, কারও রক্তচাপ হঠাৎ কমে বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে, এবং চিকিৎসকদের মতে সবচেয়ে বেশি জটিলতা দেখা দিচ্ছে শিশুদের মধ্যেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০ জন। এর মধ্যে ঢাকার দক্ষিণ সিটি এলাকায় পাঁচজন, উত্তর সিটিতে তিনজন এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে একজন করে মৃত্যু হয়েছে। চলতি মৌসুমে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০২ জনে। একই সময়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৬৯ জন রোগী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের ডেঙ্গু ভাইরাসের ধরন আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মনির হোসেন জানান, “এই ভ্যারিয়েন্টে শরীরের একাধিক অঙ্গ একসাথে আক্রান্ত হচ্ছে। যেমন—মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, হৃদযন্ত্রে সমস্যা, বা ফুসফুসে তরল জমা ইত্যাদি জটিলতা দ্রুত দেখা দিচ্ছে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক কম থাকায় তারা দ্রুত গুরুতর অবস্থায় চলে যাচ্ছে।”
অধ্যাপক ডা. সাঈদা আনোয়ার বলেন, “আগে সাধারণত তিন দিন জ্বরের পর ডেঙ্গুর ক্রিটিক্যাল ফেজ শুরু হতো। কিন্তু এখন সেই সময়সীমা বদলে গেছে—অনেক ক্ষেত্রেই সাত থেকে দশ দিন পর্যন্ত জ্বর স্থায়ী হচ্ছে এবং জ্বরের মধ্যেই জটিলতা দেখা দিচ্ছে। তাই শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বরের শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।”
চিকিৎসকরা মনে করেন, ডেঙ্গুর এই নতুন বাস্তবতায় সচেতনতা ও দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণই সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে অবহেলা না করে শুরু থেকেই পর্যাপ্ত যত্ন ও চিকিৎসা নিতে হবে।