
পুরুষের প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসতে পারে। সামাজিক মাধ্যম তোলপাড় করা এই ইস্যুতে বিশেষজ্ঞরা প্রজননস্বাস্থ্য রক্ষার কিছু নিয়ম কড়াভাবে মানতে বলছেন।
বিভিন্ন লাইফস্টাইল মিডিয়াতেও দেখা যাচ্ছে এই ইস্যু। শুনতে হাস্যকর মনে হলেও যদি প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিতিভ এসেই যায়, তবে তা পুরুষদের জন্য এক বিপদসংকেত হতে পারে। আর এমন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তবে প্রাথমিকভাবে এর সম্ভাব্য কারণ আর করণীয় সম্পর্কে কিছুটা ধারনা নেওয়া যেতে পারে। আর সেই সঙ্গে এ ইস্যুতে বিশেষজ্ঞরা যেসব সতর্কতা অবলম্বন করতে বলছেন আর জীবনযাপনের যে শ্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে এমন জটিলতা থেকে নিজেকে বাঁচাতে বলছেন, সেগুলোও দেখে নিই চলুন এক নজরে।
জীবনযাপনের কিছু প্রয়োজনীয় অভ্যাস থাকলে সব পুরুষই ভালো প্রজননস্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারেন। কিন্তু এর ব্যত্যয় ঘটলে তা আপনার জন্য বিপদ ও দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। কিছুদিন ধরে সামাজিকি মাধ্যমে এক অদ্ভুত ইস্যু নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে। আর তা হলো পুরুষের প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসা। প্রথমত পুরুষেরা প্রেগন্যান্সি টেস্ট করবেনই বা কেন। যাই হোক, সামাজিক মাধ্যমে যখন আলোচনা হচ্ছে, নিশ্চয়ই কেউ না কেউ তো করেছেন তা।
এই সেপ্টেম্বরে, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক বহুলপঠিত আর্টিকেলে ভারতের বেঙ্গালুরুর অ্যাসটার হুইটফিল্ড হাসপাতালের অবস্টেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনোকোলজির কনসালট্যান্ট ড. দীপ্তি জানিয়েছেন যে ঘরোয়া প্রেগন্যান্সি টেস্টের একটাই লক্ষ্য। তা হলো মূত্রে এইচসিজি(হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রপিন) হরমোন আছে কি না তা খুঁজে বের করা।
মহিলাদের ক্ষেত্রে ডিম্বানুর নিষেক ও ইমপ্লান্টেশনের পর এই হরমোন দ্রুত বাড়ে, কারণ তখন গর্ভের কোষ এইচসিজি তৈরি করে। তাই এইচিসজিকে গর্ভধারণের অন্যতম সঠিক সূচক বলা হয়।কিন্তু সত্যি বলতে, কোনোভাবেই পুরুষদের গর্ভধারণ সম্ভব নয়। ফলে একজন পুরুষ যখন একই পরীক্ষা করেন, প্রায় নিশ্চিতভাবেই নেগেটিভ ফলই আসবে। ড। দীপ্তি এই প্রসঙ্গে বলেন, খুবই বিরল ক্ষেত্রে একজন পুরুষের প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসতে পারে, যা শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে।
এটি কখনই গর্ভধারণের কারণে নয়, বরং কিছু শারীরিক অবস্থায় এইচসিজি তৈরি হতে পারে। তিনি বলেছেন, সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো টেস্টিকুলার টিউমার, যেখানে অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধি থেকে এইচসিজি তৈরি হতে পারে। আবার লিভার, পেট বা ফুসফুসের কিছু বিরল টিউমার থেকেও এই হরমোন উৎপন্ন হতে পারে। তাই একজন পুরুষের প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসা কখনোই উপেক্ষা করা উচিত নয়। এটি হতে পারে বড় কোনো সমস্যার সতর্কবার্তা। এমন ফলাফল দেখা গেলে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা প্রয়োজন, যাতে টেস্টিকুলার টিউমার বা অন্য কোনো বিরল সমস্যা আছে কি না তা বোঝা যায়।
পুরুষদের প্রজননস্বাস্থ্য ভালো রাখতে যেসব অভ্যাস জরুরি-সংক্রমণ থেকে বাঁচুন: ক্ল্যামিডিয়া ও গনোরিয়ার মতো যৌনবাহিত সংক্রমণ পুরুষদের প্রজননস্বাস্থ্যে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
নিয়মিত ডাক্তার দেখান-স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত চেকআপ জরুরি। এতে সমস্যা আগেই ধরা পড়ে।
ধূমপান ও তামাক ছাড়ুন-ধূমপান বিষাক্ত এবং পুরুষদের ইরেকটাইল ডিসফাংশনের অন্যতম প্রধান কারণ
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার নিয়মাবলী মেনে চলুন-জননাঙ্গ ও এর আশেপাশের স্থান নিয়মিত পরিষ্কার না রাখলে জীবাণু জমে সংক্রমণ হতে পারে।যাপনের কিছু নিয়ম মানতেই হবে পুরুষদের প্রজননস্বাস্থ্য ভালো রাখতে
স্থূলতা ও জীবনযাপনগত সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করুন: স্থূলতা বিভিন্নভাবে প্রজননক্ষমতায় প্রভাব ফেলে। সঠিক খাবার, ব্যায়াম এবং কম স্ট্রেস প্রজননস্বাস্থ্য ভালো রাখে। প্রতিদিন ১৫–২০ মিনিট ব্যায়াম করুন।
সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস