
রাইজিংসিলেট- সুদানের যুদ্ধবিধ্বস্ত দারফুর অঞ্চলে প্যারামিলিটারি বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে জোর করে রক্ত সংগ্রহ করছে—এমন তথ্য জানিয়েছেন ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী এবং ত্রাণকর্মীরা।
উত্তর দারফুরের এল ফাশেরে বসবাসকারী অ্যাডাম নামের এক ব্যক্তি জানান, তাকে প্রথমে একটি হাসপাতালে এবং পরে আরএসএফ–এর এক কমান্ডারের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক সপ্তাহ ধরে তার দেহ থেকে বারবার রক্ত নেয়া হয়। তিনি বলেন, “আমি জানতাম না কতটা রক্ত নিয়েছে। মনে হচ্ছিল যেন শরীরের সব রক্তই নিয়ে যাবে।”
অ্যাডামের মতো আরও বহু মানুষ একই অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন। একটি ছোট ক্লিনিক সদৃশ স্থানে তিনি কমপক্ষে পঞ্চাশজনকে দেখেছিলেন, যাদের শরীর থেকে ধারাবাহিকভাবে রক্ত নেওয়া হচ্ছিল।
শুধু হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নয়—রাস্তাঘাট থেকেও মানুষ অপহরণ করে রক্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সুদানি নাগরিক জানান, এল ফাশের থেকে তাবিলা যাওয়ার পথে তাকে এবং তার দুই আত্মীয়কে আটকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রক্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন, “আমাদেরকে বলা হয়, চিন্তা করো না, মরবে না—আমাদের সৈন্যদের জন্যই তোমাদের রক্ত লাগবে।”
তবে আরএসএফ–এর রাজনৈতিক শাখা তাসিসের মুখপাত্র আলএলদিন নুগুদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এল ফাশের দখলের পর বাহিনীর বিরুদ্ধে নানা ‘গুজব’ ছড়ানো হচ্ছে।
অন্যদিকে দারফুরের সাবেক গভর্নর মিন্নি মিন্নাবি দাবি করেন, অক্টোবরের শেষার্ধে মাত্র তিন দিনে আরএসএফ প্রায় ২৭ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।
দীর্ঘদিন ধরে দারফুরে আরএসএফ ও সরকারি বাহিনী এসএএফ–এর মধ্যে সংঘাত চলছে। এই যুদ্ধে হাজারো মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আরএসএফের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ ওঠা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি এসএএফ অভিযোগ করছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত আরএসএফকে যুদ্ধ সরঞ্জাম সরবরাহ করছে।