
নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম । তিনি বলেছেন, সিলেটের জনপ্রিয় এই নেতাকে গুমের পর হত্যা করা হয়।
ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আলী সর্বশেষ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সিলেট-২ আসনে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১২ সালের এপ্রিলে রাজধানীর বনানীতে বাসার কাছ থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, এরপর থেকে তার আর কোনো হদিস মেলেনি।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালে গুম-খুনের অভিযোগে মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিলের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান চিফ প্রসিকিউটর। তদন্তে জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে একশর বেশি মানুষকে গুমের পর হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছরের (২০২৪) ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হলে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের পর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার আমলে গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত শুরু হয়। এই গুম-খুনের অন্যতম ‘কুশীলব’ হিসেবে র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের নাম আসে, যিনি আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সেনাবাহিনীর চাকরি হারিয়ে গ্রেপ্তার হন।
গুমের ঘটনার ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্তে ইলিয়াস আলীসহ বিভিন্নজনকে গুম করার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানান তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইলিয়াস আলীকে উঠিয়ে নেওয়া, রাস্তা থেকে তাকে গুম করা এবং তাকে পরবর্তী সময় হত্যা করা হয়েছে বলে তদন্তে জানা গেছে।
গুমের পর হত্যার ঘটনায় জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ প্রসিকিউশন উপস্থাপনের পর ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নেন। গুমের তদন্তে ৫০০ মানুষকে হত্যার বিষয়ে প্রসিকিউশনের কাছে তথ্য এসেছে বলে জানান প্রধান প্রসিকিউটর।ইলিয়াস আলীসহ বিরোধী নেতাদের আওয়ামী লীগ আমলে গুম হওয়ার ঘটনাগুলোয় সরকারি সংস্থার বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছিল। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলোও সরব হয়েছিল, তবে তখন কোনো সংস্থাই স্বীকার করেনি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতারা তখন গুমের অভিযোগগুলোকে ‘নাটক’ বলেও আখ্যায়িত করেছিলেন।