
রাইজিংসিলেট- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট হস্তান্তর-সংক্রান্ত বিদ্যমান প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) প্রশাসন অধিশাখা–১ এর উপসচিব ড. মো. নুরুল আমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, সরকারি ও আধা–সরকারি সংস্থা কর্তৃক উন্নয়নকৃত আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের হস্তান্তর-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা এখন আরও সহজ ও স্বচ্ছ হবে। এতে লিজগ্রহীতাদের ভোগান্তি কমবে, দুর্নীতি রোধ হবে এবং প্রক্রিয়া হবে ডিজিটাল ও সময়সাশ্রয়ী।
নির্দেশনার মূল দিকগুলো নিম্নরূপ:
- লিজদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল:
এখন থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বা এর অধীন সংস্থা কর্তৃক বরাদ্দকৃত আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের উত্তরাধিকারসূত্রে, ক্রয়, দান বা হেবা প্রক্রিয়ায় নামজারি, দলিল সম্পাদন বা বাতিল, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি তৈরি বা বাতিল, এবং ব্যাংক ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে লিজদাতা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আর লাগবে না।
তবে কোনো প্লটের আয়তন পরিবর্তন, একাধিক প্লট একত্র করা, বা ব্যবহার শ্রেণি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পূর্বের নিয়মই বহাল থাকবে। হস্তান্তর ফি ও জমা প্রক্রিয়া:
ফ্ল্যাট বা ভবনসহ জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দলিলমূল্যের ২% এবং শুধুমাত্র প্লট হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ৩% ফি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুকূলে জমা দিতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ক্ষেত্রে এই অর্থ নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (NTR) হিসেবে সরকারী কোড অনুযায়ী গ্রহণ করা হবে।রেকর্ড সংরক্ষণ ও জরিমানা:
দলিল নিবন্ধনের পর ৯০ দিনের মধ্যে ক্রেতা বা দলিলগ্রহীতা সার্টিফায়েড কপি ও নামজারির নথি লিজদাতা প্রতিষ্ঠানে জমা দিতে বাধ্য থাকবেন। নির্ধারিত সময়ে তা না করলে প্রতিদিন ৫০ টাকা হারে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করা যাবে।
প্রতিষ্ঠানটি রেকর্ড হালনাগাদ করে ৩০ দিনের মধ্যে মালিককে ডাক বা ই-মেইলের মাধ্যমে জানাতে হবে। দেরি হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।লিজ মেয়াদ নবায়ন:
৯৯ বছর মেয়াদি লিজের মেয়াদ শেষে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন বলে গণ্য হবে। এ সময় হস্তান্তর ফি প্রযোজ্য হবে না।
তবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া প্লটের বিভাজন বা একত্রিকরণ কিংবা মাস্টারপ্ল্যান পরিবর্তন করা যাবে না।অ-আবাসিক সম্পত্তি:
বাণিজ্যিক, শিল্প বা প্রাতিষ্ঠানিক প্লট ও ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে লিজদাতা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রক্রিয়া আগের মতোই চালু থাকবে।বিরোধপূর্ণ ও বিশেষ বরাদ্দের সম্পত্তি:
যেসব সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে বিরোধ আছে, সরকারের স্বার্থ জড়িত, পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত বা ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিশেষ বিবেচনায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে পূর্বের অনুমোদন প্রক্রিয়া বহাল থাকবে।তফসিল প্রকাশ:
কোন কোন আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাটে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে, তার তালিকা (তফসিল) শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। প্রয়োজনে তাতে সংশোধনের ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাখবে।
এই নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে এবং জনস্বার্থে জারি করা হয়েছে।