
ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেমন রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ বাড়ছে, তেমনি ক্রীড়াঙ্গনেও উঠছে একই সুর।
এর একদিন পরই ইউরোপের তিনটি দেশ থেকে হুমকি আসে, ইসরায়েল থাকলে তারা ইউরোভিশন সং কনটেস্ট থেকে সরে দাঁড়াবে। যদিও এখন পর্যন্ত অন্য কোনো বিশ্বনেতা সানচেজের মতো সরাসরি খেলাধুলায় ইসরায়েল নিষিদ্ধের দাবি করেননি।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর স্পেনে প্রায় এক লাখ মানুষ ‘প্রো-প্যালেস্টিনিয়ান’ সাইক্লিং বিক্ষোভে অংশ নেন। তবে ট্যুরের শেষ ধাপে পুলিশের বাধায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনার পরই স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ আন্তর্জাতিক খেলাধুলা থেকে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, রাশিয়া যখন নিষিদ্ধ হতে পারে, তবে ইসরায়েল কেন নয়? গাজায় আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলকে বয়কট করতে হবে।
ফিলিস্তিন সকার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় ইতোমধ্যে অন্তত ৬৫০ জনের বেশি ক্রীড়াবিদ নিহত হয়েছেন। তাই দেশটিকে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছে তারা।
তবে আইওসি (আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি) ও ফিফা এর আগে জানিয়েছিল, রাশিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের পরিস্থিতি এক নয়। তাদের মতে, রাশিয়া অলিম্পিক নীতিমালা ভঙ্গ করেছিল, কিন্তু ইসরায়েল করেনি। যদিও এ দাবির পক্ষে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি সংস্থাগুলো।
আগামী ৬ নভেম্বর ইউরোপা লিগে ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলা বনাম ইসরায়েলি ক্লাব মাকাবি তেলআবিব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ব্রিটিশ সংসদ সদস্য এরই মধ্যে উয়েফাকে ম্যাচ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইসরায়েলের বিপক্ষে খেলতে বাধ্য হচ্ছে ইতালি ও নরওয়ে, যদিও দুই দেশই এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
আয়ারল্যান্ড বাস্কেটবল প্রধান নির্বাহী জন ফিহানও প্রকাশ্যে বলেছেন, ইসরায়েলের মুখোমুখি হওয়া কাম্য নয়। কিন্তু ম্যাচ বয়কট করলে কঠোর শাস্তির আশঙ্কায় দলগুলো মাঠে নামতে বাধ্য হচ্ছে।
রাজনীতি থেকে সংস্কৃতি সবখানেই যেমন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কটের দাবি জোরালো হচ্ছে, তেমনি ক্রীড়াঙ্গনও ধীরে ধীরে সেই পথে এগোচ্ছে। যদিও বড় বড় ক্রীড়া সংস্থাগুলো এখনো কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি, তবে মাঠে এবং গ্যালারিতে প্রতিবাদ দিন দিন তীব্র হচ্ছে।
টেনিসেও একই পরিস্থিতি। কানাডায় এক ইসরায়েলি খেলোয়াড়ের ম্যাচ নিরাপত্তা কারণে অনুষ্ঠিত হয় দর্শকবিহীন কোর্টে। তার আগে শতাধিক কানাডীয় ক্রীড়াবিদ ও শিক্ষাবিদ টেনিস কানাডাকে ম্যাচ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
প্রায় প্রতিটি বড় ম্যাচেই ইউরোপীয় গ্যালারিতে ফিলিস্তিনপন্থী প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। মে মাসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে পিএসজি সমর্থকরা প্রদর্শন করেন “গাজায় গণহত্যা বন্ধ করো” লেখা ব্যানার। আগস্টে সুপার কাপ ম্যাচে মাঠে ঝুলে “শিশু হত্যা বন্ধ করো, বেসামরিক হত্যা বন্ধ করো” ব্যানার।