রাইজিংসিলেট- আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর সংশোধনী খসড়া অনুমোদন দিয়েছে। সংশোধিত খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো দল জোটে অংশ নিলেও তাকে নিজের দলীয় প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।
এই সিদ্ধান্তে বিএনপি ও বেশ কয়েকটি ছোট রাজনৈতিক দল তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ, আলোচনার বাইরে থেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এটি বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংসদে বহুমতের অংশগ্রহণকে সীমিত করবে।
তবে জামায়াতে ইসলামী এ বিষয়ে আপত্তি না জানালেও, নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিষয়টিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আরপিও সংশোধনের খসড়ায় প্রতীকের বিষয়ে বিএনপির কোনো সম্মতি ছিল না। রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় সরকারকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।” তিনি জানান, বিএনপি এ বিষয়ে শিগগিরই নির্বাচন কমিশন ও আইন উপদেষ্টার কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেবে।
বিএনপির আশঙ্কা, দলীয় প্রতীকের বাধ্যবাধকতা থাকলে অনেক ছোট দল ভোটে টিকতে পারবে না, কারণ তাদের প্রতীক এখনো ভোটারদের কাছে তেমন পরিচিত নয়।
জোটভুক্ত ছোট দলগুলোও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, আগে জোটের প্রধান দলের প্রতীকে নির্বাচন করা যেত বলে ভোটে টিকে থাকা সহজ ছিল, কিন্তু এখন স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচনে গেলে জনসাধারণের কাছে পরিচিতি গড়ে তুলতে সময় লাগবে।
এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ মন্তব্য করেন, “সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ না করেই একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জোটগত নির্বাচনে প্রতীক উন্মুক্ত রাখা উচিত ছিল।”
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “এখন প্রতীক পরিচিত করতে অনেক সময় ও শ্রম দিতে হবে, যা ছোট দলের জন্য কঠিন।”
বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ মনে করেন, “এই আইন বাস্তবায়ন হলে সংসদে বহুমতের অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হবে এবং ছোট দলগুলো তাদের অবস্থান হারাবে।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিও একই মত প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদ বলেন, “এই সিদ্ধান্তে প্রতিটি দলের নিজস্বতা স্পষ্ট হবে এবং জাতীয়ভাবে ভোটের অনুপাত বোঝা সহজ হবে, যদিও ছোট দলের জন্য বাস্তবায়নটা চ্যালেঞ্জিং।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নতুন এই নিয়ম স্বল্পমেয়াদে জোট রাজনীতির গতি কমিয়ে দিতে পারে, কারণ ছোট দলগুলো এখনো সংগঠন ও প্রতীকের দিক থেকে দুর্বল অবস্থায় আছে।
কিছু দল প্রস্তাব করেছে, এই বিধানটি যেন পরবর্তী নির্বাচন থেকে কার্যকর হয়, যাতে তারা সংগঠন শক্তিশালী করা ও প্রতীক পরিচিত করার সুযোগ পায়।
সুত্র- NWS 24