
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম উদ্বেগজনক এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে । হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তিনি। এ অবস্থায় দ্রুত তার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রহর গুণছেন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আবেগঘন এক পোস্ট করেছেন তারেক রহমান, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, এখনই দেশে ফেরার বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তার জন্য অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।
তারেক রহমানের এ স্ট্যাটাসের পর থেকেই ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। রোববার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকা জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
রুহুল কবীর রিজভী আরও জানান, বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তার শারিরীক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। খালেদা জিয়াকে দেখতে অহেতুক হাসপাতালে ভিড় না করার অনুরোধও জানিছেন তিনি।
সেখানে তিনি বলেন, দলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে যখন উপযুক্ত সময় মনে করবেন, তখনই দেশে ফিরবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এর আগে, দেশে ফেরা নিয়ে শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান লিখেছেন, সংকটকালে মায়ের স্নেহ স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সবার মতো এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।
ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও লেখেন, স্পর্শকাতর এই বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত। রাজনৈতিক বাস্তবতার এই পরিস্থিতি প্রত্যাশিত পর্যায়ে উপনীত হওয়া মাত্রই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমার সুদীর্ঘ উদ্বিগ্ন প্রতিক্ষার অবসান ঘটবে বলেই আমাদের পরিবার আশাবাদী।
বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নিয়মিত বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখছেন প্রধান উপদেষ্টা। একইসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনকে প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রাজধানীর একটি হাসপাতালের সিসিইউতে ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ অবস্থায় চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়া। ফুসফুসে সংক্রমণ থেকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এরপর দেখা দেয় নিউমোনিয়া। সঙ্গে রয়েছে কিডনি, লিভার, আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসের পুরনো সমস্যা। ফলে একটি রোগের চিকিৎসা দিতে গেলে আরেকটির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।