ঢাকামঙ্গলবার , ৭ জানুয়ারি ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রশাসনের পদস্থকর্মকর্তারা দফায়-দফায় মিটিং হলেও চোরাকারবারিদের লাগান টানা যাচ্ছেনা!

rising sylhet
rising sylhet
জানুয়ারি ৭, ২০২৫ ৭:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে সিলেটে সীমান্ত । চোরাচালান বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের পদস্থকর্মকর্তারা দফায়-দফায় মিটিং হলেও চোরাকারবারিদের লাগান টানা যাচ্ছেনা। সীমান্ত এলাকার চোরাচারালান বন্ধ করতে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি, সিলেট এসএমপি কমিশনার, চোরাচালান বিরোধী ট্রাক্সফোর্স, চোরাচালান মনিটরিংসেল প্রতিমাসে করছেন একাধিক সভা তবে দিন শেষে ফলাফল জিরো।

দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী চারটি থানার ওসি ও জেলা ডিবি (ওসি উত্তর) সরাসরি জড়িত এসব চোরাচালানের সাথে। চোরাচালানের ল্যাইন নিয়োগ দিয়ে গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার তোফায়েল আহমদে মাসিক প্রায় ২০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন। এই থানার সব কয়টি ভিট অফিসার চোরাচালান থেকে প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়ে চোরাকারবারিদের সহযোগীতা করে থাকেন।

সূত্র বলছে পদস্থ কর্মকর্তা চোরাচালান বন্ধে তৎপর হলেও তাদের অধিনস্থ ওসি-দারোগারা জড়িয়ে পড়ছেন চোরাচালানের সাথে। সীমান্ত এলাকার থানার ওসিরা দিনে ডিআইজি, কমিশনার, এসপির মিটিংয়ে অংশ নিলেও রাতে থানায় ঠিকই বসেন চোরাচালানের লাইনম্যানদের নিয়ে। এসব মিটিং হলে থানার ওসিরা ঘুষের রেইট বৃদ্ধি সুযোগ পান।

 

 

আরও পড়ুন – বিএনপি ও ছাত্রদল থেকে বহিস্কৃত মামা ভাগিনা সিন্ডিকেট জাফলং খাবলে খাচ্ছে

 

বিগত সরকারে আমলে চোরাচালান ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলো আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী। পট পরিবর্তনের পরে তা নিয়ন্ত্রন করছেন কতিপয় নামধারী কিছু বিএনপি, যুবদল,ছাত্রদলে নেতাকর্মীরা। চোরাচালান ব্যবসায় পুরাতনদের সাথে নতুন কিছু লোক জড়িত হয়েছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী শতাধিক স্থান দিয়ে চোরাই পণ্য দিনে রাতে প্রকাশ্যে প্রবেশ করছে শহরে। সে সব পন্য আবার সারাদেশে পাঠানো হচ্ছে কাভার্ড ভ্যান,বালু ভর্তি ট্রাক দিয়ে। ভারত থেকে এসব পণ্য স্থানীয় ভাবে ‘বুঙ্গার মাল’ নামে পরিচিত।

জৈন্তাপুর থানার ওসি আবুল বাসার মোহাম্মদ বদারুজ্জামান তিনি প্রতি মাসে চোরাচালান থেকে প্রতিমাসে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ঘুষ নেন। এই থানা এলাকায় সিলেটের শীর্ষ চোরাকাবারীদের বাড়ি ওচোরাচালানের সর্বচ্চ ঘাঁটি হরিপুর ও দরবস্ত বাজার অবস্থিত। কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল তিনি চোরাচালান থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন। তার থানা এলাকার ভিতর দিয়ে সীমান্তের চোরাইপন্য নিরাপদে সিলেট শহরে পৌঁছে বলে চোরাকারবারিরা নিশ্চিত করেন।

জকিগঞ্জ থানার ওসি জহিরুল ইসলাম মুন্না চোরাচালান থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১২ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন। সিলেট জেলা ডিবি (উত্তরের ডিসি) ওসি আলী আশরাফ প্রতিমাসে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন। তিনি প্রতিমাসে নতুন-নতুন লাইনম্যান নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এসব ঘুষের টাকা চোরাকারবারিরা পুলিশের নিয়োগকৃত লাইনম্যানের মাধ্যমে থানায় প্রতি সপ্তাহে পৌঁছেদেন।

পুলিশের পাশাপাশি পাশাপাশি সীমান্ত এলাকার বিজিবির বিভিন্ন ক্যাম্প কামান্ডাররাও জড়িত রয়েছেন এসব চোরাচালানের সাথে। তাদেরও রয়েছে নিয়োগকৃত নিজস্ব লাইনম্যান। সীমান্তের পর সিলেট এসএমপি দক্ষিণ জোনের শাহপরান থানার ওসি মনির হোসেন, দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি মিজানুর রহমান, মোগলাবাজার থানার ওসি ফয়সাল আহমদ চোরাচালান থেকে প্রতি সপ্তাহে বড় অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে লাইনক্লিয়ার দিয়ে থাকেন।

 

আরও পড়ুন – সিলেটের কানাইঘাটে চোরাচালানের নিরাপদ রুট

 

মহাসড়ক দিয়ে এখন প্রতি ট্রাক চিনি ৫ থেকে ৮ হাজার টাকায় পার করিয়ে দিচ্ছে কয়েকটি সিন্ডিকেট। একই ভাবে অন্যান্য পণ্যের প্রকার অনুযায়ী ট্রাক প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। তবে বিজিবি ও পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন এখন পাশাপাশি র‌্যাব-৯ ও চোরাইপন্য মাদকদ্রব্য উদ্ধারে কাজ করছে। এরপরও কিছু চক্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবার চালাচ্ছেন।

সিলেটের বিভিন্ন বাজার এই‘বুঙ্গার মালে’ সয়লাব এখন কিন্তু সাধারণ ক্রেতাদের কাছে দাম আকাশচুম্বি নাগালের বাহিরে। সীমান্ত দিয়ে যে সবল চোরাইপণ্যে দেশে আসে সেগুলোর মধ্যে টিনি, কসমেটিক্স-কিট, মাদক, শাড়ী, থ্রিপিছ, আপেল, কম্বল, গাড়ির যন্ত্রাংশ, গরুসহ বিভিন্ন পণ্য। চোরাকারবারির ভাষ্যমতে, আগে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার চিনি আসত। বর্তমানে ৫-৭ কোটি টাকায় বেড়েছে।

গত ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারী পর্যন্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকার চোরাচালানকৃত পণ্য জব্দ করেছে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব সদস্যরা। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য তাদের হাতে ধরা পড়েনি কোন শীর্ষ চোরাকারবারী। কারণ মামলা দায়েরের আগেই মূলকারবারীরা থানার ওসির সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে আটক মাল ছেড়ে দেওয়ার জন্য। ব্যার্থ হলে মামলায় যেনো নিজের নাম আসে সেই জন্য বড় অংকের ঘুষ প্রদান করা হয় সেই থানার ওসিকে।

১৪১ বার পড়া হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।