
বড় ধরনের সুখবর এসেছে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা শেষ করা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য । দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৪ অক্টোবর নতুন ইমিগ্রেশন নীতিমালা ঘোষণা করেছে, যার আওতায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে সরাসরি ‘ইনোভেটর ফাউন্ডার রুট’–এ আবেদন করতে পারবেন।
এই রুটে অনুমোদন পাওয়া উদ্যোক্তারা মাত্র তিন বছরেই স্থায়ী বসবাসের (ILR) সুযোগ পাবেন। আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে।
তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা হতে হবে উদ্ভাবনী, বাস্তবায়নযোগ্য ও টেকসই, এবং অবশ্যই যুক্তরাজ্যের কোনো অনুমোদিত এন্ডোর্সিং বডি থেকে স্বীকৃতি নিতে হবে।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের যে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা গবেষণা ডিগ্রি সম্পন্ন করা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা যদি নিজেদের উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক ধারণা বা স্টার্টআপ প্রজেক্ট উপস্থাপন করতে পারেন, তবে তারা এই রুটে আবেদন করতে পারবেন।
আগে ইনোভেটর ভিসার জন্য ন্যূনতম ৫০ হাজার পাউন্ড বিনিয়োগের শর্ত ছিল। কিন্তু নতুন নীতিতে সেই বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন মূল গুরুত্ব দেওয়া হবে ব্যবসায়িক ধারণার বাস্তবতা, উদ্ভাবন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনায়।
এই রুটে যারা অনুমোদন পাবেন, তারা প্রথমে তিন বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থান করতে পারবেন। ব্যবসা পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে তারা ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন (ILR)–এর জন্য আবেদন করতে পারবেন, যা যুক্তরাজ্যে নাগরিকত্ব পাওয়ার পূর্বধাপ হিসেবে বিবেচিত।
এছাড়া উদ্যোক্তা তার পরিবারের সদস্যদেরও (স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান) সঙ্গে নিতে পারবেন। পরিবার সদস্যরা সেখানে পূর্ণ সময় কাজ ও পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন।
ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ‘স্টার্টআপ পরামর্শ সেবা’ চালু করেছে, যাতে তারা কীভাবে ব্যবসায়িক ধারণা তৈরি ও উপস্থাপন করবেন সে বিষয়ে সহায়তা পান।
বিশ্লেষকদের মতে, “ইনোভেটর ফাউন্ডার রুট” যুক্তরাজ্যকে আবারও বিশ্বে মেধা ও উদ্ভাবনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে পারে। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে এটি কেবল শিক্ষার্থীদের নয়, বরং যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ও উদ্যোক্তা খাতের জন্যও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগ যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি, গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতকে শক্তিশালী করবে। পাশাপাশি এটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার — বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করবে। কারণ এই অঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থীই উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যুক্তরাজ্যে পড়তে যান।