
রাইজিংসিলেট- দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর। সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর মধ্যে ভোলাগঞ্জ বিশেষভাবে পরিচিত পাথর উত্তোলনের জন্য। কিন্তু এই সাদা পাথর কীভাবে আসে? চলুন, জানি পাথরের উৎস ও তার সংগ্রহ প্রক্রিয়া সম্পর্কে।
প্রাকৃতিক উৎস: নদীর বুকে জন্ম নেওয়া সম্পদ। ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর মূলত আসে মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির ঢলে। ভারত সীমান্ত সংলগ্ন মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীগুলো যেমন ধলাই, পিয়াইন, লোভাছড়া ইত্যাদির পানির প্রবাহের সাথে করে আসে এই পাথর। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে প্রচুর পাথর বয়ে আনে নদীগুলো। এসব পাথর পরে ভোলাগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় জমা হয়।
উত্তোলনের প্রক্রিয়া: পরিশ্রমের ফল পাথর সংগ্রহের কাজটি বেশ কষ্টসাধ্য। সাধারণত শুকনো মৌসুমে, যখন পানির প্রবাহ কম থাকে, তখন শ্রমিকরা নদীর তলদেশ থেকে পাথর উত্তোলন শুরু করেন। অনেকে হাত দিয়ে কুড়িয়ে পাথর সংগ্রহ করেন, আবার কেউ কেউ নৌকা ও কাঠের তৈরি ফ্ল্যাটফর্মের সাহায্যে পানিতে নেমে পাথর তুলে নেন।
প্রযুক্তির ব্যবহারে বর্তমানে অনেক জায়গায় মেশিন ব্যবহার করেও পাথর উত্তোলন করা হয়। তবে এখনো বড় একটা অংশই মানবশ্রম নির্ভর।
পরিবহন-ব্যবহার ভোলাগঞ্জ থেকে উত্তোলিত সাদা পাথর স্থানীয় বাজারে ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হয়। বিশেষত নির্মাণ খাতে এর চাহিদা ব্যাপক। পাথর কুচি, চিপস, বালু ইত্যাদির জন্য এই পাথর প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহার করা হয়। নদীপথ ও সড়কপথে ট্রাক ও নৌযানের মাধ্যমে এই পাথর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যায়।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পরিবেশগত চিন্তা- পাথর উত্তোলন অবশ্যই অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও পরিবেশের দিকটি ভুলে গেলে চলবে না। অপরিকল্পিত ও অতিমাত্রায় পাথর উত্তোলনের ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ, জীববৈচিত্র্য ও স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ে। তাই নিয়ম মেনে এবং টেকসই পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন নিশ্চিত করা জরুরি।