
রাইজিংসিলেট- যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে জানিয়েছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে আর তেল আমদানি করবে না। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ধরনের কোনো প্রতিশ্রুতি বা আলোচনা হয়েছে বলে জানায়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেন, তিনি ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে এমন কোনো আলোচনার বিষয়ে অবগত নন এবং রুশ তেল আমদানি বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি সম্পর্কেও কিছু জানেন না।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভারত বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে একটি বড় আমদানিকারক দেশ এবং তার প্রধান লক্ষ্য হলো জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা ও সরবরাহ নিশ্চিত করা। বিবৃতিতে রাশিয়ার নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি এবং ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়াও ছিল না।
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের কৌশলগত ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রুশ তেলের দাম কমে গেলে ভারত তা আমদানিতে আরও আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং বর্তমানে দেশটি রাশিয়ার অন্যতম বড় তেল ক্রেতা।
ভারত বারবার যুক্তরাষ্ট্রের চাপ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জনগণের জ্বালানি চাহিদা পূরণে সাশ্রয়ী জ্বালানির উৎস গুরুত্বপূর্ণ। তারা জানিয়েছে, জাতীয় স্বার্থে তারা জ্বালানি নীতি নির্ধারণ করে থাকে।
রুশ তেলের আমদানি অব্যাহত রাখায় যুক্তরাষ্ট্র এর আগেও ভারতের ওপর বাড়তি আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে। ২০২৫ সালের আগস্টে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করে, যা আগে থেকেই আরোপিত ২৫ শতাংশের সঙ্গে যুক্ত হয়।
জ্বালানি বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া থেকে হঠাৎ তেল আমদানি বন্ধ করা ভারতের জন্য কঠিন। কেপলার নামক বাজার বিশ্লেষণ সংস্থার মতে, রাশিয়া থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৭–১৮ লাখ ব্যারেল তেল আসে, যার বিকল্প বাজার থেকে তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া সম্ভব নয়।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সরকারি রিফাইনারিগুলো কিছুটা আমদানি কমালেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো রুশ তেলের ওপর নির্ভরতা বাড়িয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতীয় তেল করপোরেশন (আইওসিএল) জানুয়ারিতে ১ কোটি ৩৫ লাখ ব্যারেল রুশ তেল আমদানি করলেও সেপ্টেম্বরে তা কমে ৪৬ লাখ ব্যারেলে নামে। তবে অক্টোবর মাসে তা আবার বেড়ে ৭০ লাখ ব্যারেলে পৌঁছেছে।