
রাইজিংসিলেট- শীতের আমেজ শুরু হলেই অনেকের অ্যাজমা বা হাঁপানির সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ঠান্ডা বাতাস, মৌসুমি হাঁচি–কাশি এবং ঘরের ভেতরের অ্যালার্জেন মিলেই এ সময় রোগীদের অতিরিক্ত ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রয়োজনীয় সতর্কতা ছাড়া শীতকাল অ্যাজমা রোগীদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
বিভিন্ন স্বাস্থ্য–তথ্যভাণ্ডারে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিবছর প্রায় ৯.৮ মিলিয়ন মানুষ অ্যাজমাজনিত কারণে চিকিৎসা সহায়তা নেন, আর ১.৮ মিলিয়ন রোগী পৌঁছান জরুরি বিভাগে। কোলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ইরভিং মেডিক্যাল সেন্টারের অ্যালার্জি–ইমিউনোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. স্টিফেন ক্যানফিল্ড জানান, শীতের শুষ্ক ও ঠান্ডা বাতাস অ্যাজমার উপসর্গ বাড়াতে মুখ্য ভূমিকা রাখে।
কেন শীতে অ্যাজমা বাড়ে?
ডা. ক্যানফিল্ডের ব্যাখ্যা অনুযায়ী- শীতকালে ফ্লু এবং শ্বাসনালীর বিভিন্ন সংক্রমণ বেড়ে যায়।
অধিক সময় ঘরের ভেতরে কাটানোর কারণে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ে, যা অ্যাজমার উপসর্গকে জটিল করতে পারে।
ঘরের ধুলাবালি, পোষা প্রাণীর লোম, ছাঁচসহ বিভিন্ন ইনডোর অ্যালার্জেন শ্বাসনালীর প্রদাহ বাড়িয়ে শ্বাসকষ্ট, কাশি ও শোঁ–শোঁ শব্দের মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে।
ঠান্ডা বাতাস সরাসরি শ্বাসনালী সংকুচিত করে, ফলে বাইরে বের হলে অনেকে শ্বাসকষ্টে ভোগেন।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শীতের শুরুতেই অ্যালার্জি পরীক্ষা করলে উপসর্গ বাড়ানোর কারণগুলো চিহ্নিত করা সহজ হয় এবং আগেভাগে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
শীতে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
ডা. ক্যানফিল্ডের পরামর্শ অনুযায়ী—
বাইরে গেলে মুখ–নাক ঢেকে রাখুন।
ঠান্ডা পরিবেশে ভারী শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন।
ঘর পরিষ্কার ও অ্যালার্জেনমুক্ত রাখুন।
ঘরের ভেতর যথেষ্ট বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন।
নিয়মিত ফ্লুর টিকা নিন।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
যদি মনে হয় উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে থাকছে না, তবে দেরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নতুনভাবে কাশি শুরু হলে, শ্লেষ্মা বেড়ে গেলে কিংবা জ্বর ১০১°F-এর বেশি হলে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতের শুরুতেই সঠিক ব্যবস্থা নিলে বড় ধরনের জটিলতা এড়ানো সম্ভব এবং অ্যাজমা রোগীরাও স্বাভাবিকভাবে পুরো শীতকাল কাটাতে পারেন।