ঢাকামঙ্গলবার , ৪ মার্চ ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আরো
  5. খেলার খবর
  6. গণমাধ্যম
  7. চাকরির খবর
  8. জাতীয়
  9. দেশের খবর
  10. ধর্ম পাতা
  11. পরিবেশ
  12. প্রবাস
  13. প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  14. বিজ্ঞান প্রযুক্তি
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ এখনও খাবলে খাচ্ছে জাফলং,এক রকম অসহায় প্রশাসনের সর্বচ্চ কর্তাব্যক্তিরা !

rising sylhet
rising sylhet
মার্চ ৪, ২০২৫ ৭:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ads

শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ এখনও খাবলে খাচ্ছে জাফলং ,আদালতের আদেশ কি বাস্তবায়ন করতে পারবে পুলিশ ?

পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ে বালু-পাথর রক্ষায় এক রকম অসহায় প্রশাসনের সর্বচ্চ কর্তাব্যক্তিরা।

সিলেট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার দুজনে এক রকম অসহায়ত্ব প্রকাশই করে বললেন, লাগাতার অভিযান, ১২টি মামলা করেও জাফলংয়ের অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছেনা। থানা পুলিশ গেলে কিছু সময় বন্ধ থাকে পাথর উত্তোলন, চলে আসলে আবার শুরু হয়। সরেজমিন দেখা গেছে. থানার পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যদের সামনেই চলছে ধানব যন্ত্র দিয়ে জাফলং ধ্বংশের উৎসব। কয়েক হাজার নৌকা দিয়ে শ্রমিকরা তুলছেন বালু-পাথর। কেউ লাগিয়েছেন শ্যালো মেশিন আবার কেউ লাগিয়েছে এক্সেভেটর বা ফেলুডার। কেউ বা আবার ফোর সিলি›ডার মেশিন।

স্থানীয়রা জানান, গত ৫ ৫/৬ মাস থেকে পূর্বজাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্সের প্রত্যক্ষ মদদে জাফলং ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি, ট্রাক শ্রমিক নেতা, ছাত্র-জনতার পৃথক তিনটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামী সবেদ উরফে সমেদ নিজেই গড়ে তুলেছেন একটি লুটতোরাজ বাহিনী। এই বাহিনী বিএনপি নেতা আমজাদ বক্সের হয়ে সকাল থেকে ভোর পর্যন্ত জাফলং এলাকার প্রতিটি নৌকা, শ্যালো মেশিন, পাথর-বালু বাহি গাড়ি, কোয়ারীর গর্ত থেকে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা উত্তোলন করে থাকেন। আর তার অনুসারীরা অভিযোগ করেন, আমজাদ বক্স নামে হলেও আসল কামে আছেন ।

পূর্বজাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা ও কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুস সাত্তার, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউসুফ আহমেদসহ কয়েকজন। তাদের রয়েছে পৃথক সিন্ডিকেট। রয়েছে নিজস্ব একটি লাইন সিন্ডিকেট। এরা জাফলং এলাকায় যে সকল পাথর কোয়ারী রয়েছে সেখান থেকে প্রতিদিন ১৫ হাজার টাকার করে চাঁদা কানেকশন করেন। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা ও কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকের রয়েছে তিনটি বিশাল পাথর কোয়ারী। যা জাফলং মন্দিরের জুম এলাকায় গেলেই চোখে পড়বে। তাদের দাবী তারা এই কোয়ারীগুলো ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ মিয়ার কাছ থেকে সাবলিজ নিয়ে। শেয়ারে তারা পাথর উত্তোলন করছেন সবেদের সাথে।

স্থানীয়রা আরো জানান, উক্ত জমির প্রকৃত মালিক মৃত মন্তন মিয়া কিন্তু সিলেট নগরীর বাসিন্ধা রায়নগর এলাকার বাসিন্ধা দেলোয়ার উরফে সোনা দেলোয়ার একটি জাল দলিল সৃজন করে নিজেকে ঐ জমির মালিক দাবী করেন। এ নিয়ে তার সাথে মৃত মন্তনের মিয়াগংদের একাধিক মামলা আদালতে চলমান রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করে স্থানীয়রা জানান, সবেদ, মাসুদ রানা, রাজ্জাক যে জমি থেকে কোয়ারী করে পাথর তুলছেন উক্ত জমির প্রকৃত মালিক মৃত মন্তন মিয়াগং। মন্তন ও মঞ্জুর মিয়ার প্রচুর জমি রয়েছে জাফলং এলাকায়। কিন্তু মৃত মন্তনের পরিবারের সদস্যরা সামাজিক ও আর্থিক ভাবে দূর্বল হওয়ায় শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ ও বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্সসহ তারা মন্তনের সন্তানদের পুলিশী ভয় দেখিয়ে তাদের জমি জবর দখল করে পাথর উত্তোলন করছেন।

জাফলং এলাকায় বিভিন্ন গ্রুপ হলেও দিন শেষে এখন দলীয় ও পুলিশী লাইনের সকল হিসাব দিতে হয় পূর্বজাফলং বিএনপির সভাপতি ক্যাশিয়ার আমজাদ বক্সকে। তিনিই দলীয় ও প্রশাসনের লাইন ম্যানেজ করেন। তার কথা মতোই চলতে হয় জাফলং এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের। তিনি প্রায় জেলা মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দের নামের ধাম্ভক্তি দিয়ে থাকেন। অথচ জেলা বিএনপির কোন নেতাই এসব কর্মকান্ড বিষয়ে জানেনা।

সম্প্রতি জাফলং জুমপার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মৃত মন্তনের জমির উপর প্রায় ৬ টি বিশাল পাথর কোয়ারীর মাটি কাটা হয়েছে, দিনে চলছে লেবার দিয়ে পাথর উত্তোলন আর রাতে চালানো হচ্ছে এক্সেভেটার, ফেলুডার।

সর্বশেষ নিজের জমি রক্ষায় বাধ্য হয়ে ভুমির মালিক মন্তন মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান মুহিব সিলেট সহকারি জজ আদালত গোয়াইনঘাট এ সম্প্রতি একটি মামলায় অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধের জন্য আদালতের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করলে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ইং জুমপার ২৬৩ নং দাগের ভুমির উপর সব রকম স্থিতি অবস্থা (ইংজাংশন) জারি করে ব্যবস্থা নিতে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের আদেশের পর বিএনপি নেতা আমজাদ বক্সের পক্ষ মদদে জাফলং ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ ও ইউনিয়ন বিএনপির ক্যাশিয়ার আব্দুর রাজ্জাক রাতের আধারে এক্সেভেটার ফেলুডার লাগিয়ে প্রায় প্রায় ১০ কোটি টাকার পাথর লুট করে নিয়ে গেছেন এ কয়েক দিনে। ইতিমধ্যে তিনি থানার ওসি, জেলা প্রশাসক, সিলেট পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। তারা তাকে সহযোগীতার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ প্রশাসনের কোন নির্দেশই আমলেই নিচ্ছেনা।

সাধারণ মানুষের প্রশ্ন জাফলং ধ্বংশের নায়ক সাবেক এমপি ইমরান আহমদের সাবেক লাইনম্যান চক্রের সদস্য সবেদ ছাত্র-জনতার তিনটি মামলার এজাহার ভ‚ক্ত আসামী হওয়ার পর তাকে পুলিশ গ্রেফতার করছেনা। বরং জাফলং খাবলে খাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে কিসের বিনিময়ে। ইতিপুর্বে জাফলংয়ে পাথর লুটপাটের মামলায় জেলা বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম শাহপরান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বহিস্কৃত বিএনপি নেতা শাহ আলম স্বপনের দলীয় পদ স্থগিত করেন। তারা দুজন এখন কোয়ারী ছেড়ে দলীয় পদ ফিরে পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কিন্তু এখন জাফলং লুটপাটকারী শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের কি কারণে শেল্টার দিয়ে যাচ্ছেন জেলার নেতৃবৃন্দ এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। কাদের ছত্রছায়ায় থেকে শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ জাফলং কোয়ারী খাবলে খাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৫ মাসে জাফলং কোয়ারি থেকে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার বালু ও পাথর লুট করা হয়েছে। সারাদেশে ছাত্র-জনতার মামলায় আওয়ামী লীগ নেতারা কারাগারে কিংবা পালিয়ে বেড়ালে প্রকাশ্যে জাফলংয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিএনপির সাবেক সাংসদ দিলদার হোসেন সেলিমের নির্বাচনী স্টেজ ভাংচুরে মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী কুখ্যাত চাঁদাবাজ ট্রাক শ্রমিক নেতা ও শ্রমিক লীগের সভাপতি সবেদ মিয়া।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, গত পাঁচ মাসে সেখানে ১৫-১৬টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার পরপর দুটি অভিযান চালানো হয়। থানায় মামলা হয়েছে ৮-৯টি।

এদুটি বাহিনীর হয়ে মাঠে দখল দায়িত্বে রয়েছেন পূর্বজাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের বহিস্কৃত সভাপতি আজির উদ্দিন, ইউনিয়ন ছাত্রদলের বহিস্কৃত সিনিয়র সহ-সভাপতি সুমন শিকদার, বহিস্কৃত সহ-সভাপতি পারভেজ শিকদার ও রুবেল আহমদ, শিমু, ইসমাঈল, মামুন।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে সরকার পতনের পর ১২০ কোটি টাকার পাথর লুটের ঘটনার মামলাটির চার্জসিট প্রক্রিয়াধিন। কিন্তু কিছুতেই যেনো থামানো যাচ্ছেনা জাফলং কোয়ারী লুটপাট।

পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্স ও ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ ও পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, কোষাধক্ষ্য আব্দুর রাজ্জাক এই দুটির বাহিনীর সদস্যরা আধিপত্ব্য বিস্তার করতে এলাকায় প্রায়ই প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেয়। ফলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। সবেদ এক সময় শাহপরানের মদদে চললেও এখন সে আমজাদ বক্সের ডান হাত হিসাবে পরিচিত।

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ জানান, অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে পুলিশি অভিযান চলছে। তিনি ছুটিতে ছিলেন তাই আদালতের আদেশটি বাস্তবায়ন করতে দেরি হয়েছে। তবে তিনি স্থানীয় পুলিশের বিট অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের আদেশটি বাস্তবায়নের জন্য।

পূর্বজাফলংয়ে বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্সের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি। তার বক্তব্য নিতে জাফলংয়ে তার নিজের বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি।

জাফলংয়ে বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলে তিনিও ধরেননি।

তবে শ্রমিকলীগ সভাপতি সবেদ প্রকাশ্যে বলেন, তিনি বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্সের হয়ে কোয়ারীতে আছেন। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে দায়ের করা কোন মামলায় জামিন নেননি আদালত থেকে। এসব মামলায় তার কিছু হবেনা বলে জানান।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদ জানান, গত ৫ আগস্টের পর প্রকৃতি-কন্যা জাফলংয়ের পাথর কোয়ারীতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে শুনেছেন। ইতোমধ্যে পাথর লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্ব-স্ব থানায় মামলা হয়েছে। দ্রæত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

বিজিবি সিলেট সদর দপ্তরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সীমান্তের ১৫০ গজের ভেতর থেকে বালু-পাথর তুললে আমরা বাধা দিই। এর বাইরে অবৈধ ভাবে কেউ কাজ করলে সেটা উপজেলা প্রশাসন দেখে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ সাহেদা বলেন, পাথর ও বালুখেকোরা প্রকাশ্যে আদালত ও সরকারকে অমান্য করছে।

সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের টাস্কফোর্স ও মোবাইল কোর্টের অভিযানে থানা-পুলিশ সহায়তা করে। খবর পেলে পুলিশও অভিযান চালায়।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।