
রাইজিংসিলেট- চার দফা দাবিকে কেন্দ্র করে দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা সোমবার (১ ডিসেম্বর) থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এর ফলে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। রোববার (৩০ নভেম্বর) সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচি ঘোষিত হয়।
দাবিগুলো হলো-
১. সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের আওতায় এনে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেট প্রকাশ।
২. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন সম্পন্ন করা।
৩. সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের অনুমোদন প্রদান।
৪. ২০১৫ সালের আগের নিয়ম অনুসারে সহকারী শিক্ষকদের দুই থেকে তিনটি ইনক্রিমেন্টসহ আগের বর্ধিত বেতন সুবিধা পুনর্বহাল করে গেজেট প্রকাশ।
বিভিন্ন জেলায় পরিস্থিতি
গাইবান্ধা- গাইবান্ধার সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা চার দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে পুরো জেলার চলমান পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ—দীর্ঘদিন ধরে তারা ন্যায্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকারের আশ্বাস বারবার আসলেও বাস্তব অগ্রগতি না হওয়ায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন তারা। দাবি না মানা হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
নোয়াখালী- সোমবার সকাল ৯টার দিকে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় মূল ফটকে ঝুলছে কর্মবিরতির ব্যানার। ভেতরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অপেক্ষা করছেন, আর শিক্ষকদের দেখা গেছে অফিসে বসে সময় কাটাতে।
শিক্ষার্থীরা জানায়—সেদিন তাদের চতুর্থ দিনের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল, এসএসসি পরীক্ষার্থীদেরও নির্বাচনী পরীক্ষা চলছিল। কিন্তু বিদ্যালয়ে এসে তারা দেখেন শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলছে। শিক্ষকরা কোনো পরীক্ষা নিচ্ছেন না, আবার কবে পরীক্ষা হবে সে সম্পর্কেও কিছু জানাচ্ছেন না। এতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। একই অবস্থা জেলার ৯টি উপজেলার ১৫টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
বরিশাল- বরিশালেও সকাল থেকে শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে যোগ দেন। তাদের দাবি—দীর্ঘদিনের চার দফা সমস্যা সমাধানে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রথম ধাপ হিসেবে তিন দিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে; দাবিগুলো পূরণ না হলে পরবর্তী সময়ে কর্মসূচি আরও কঠোর হবে বলে তারা জানান।
এদিকে শিক্ষা কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় রেখে পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
নাটোর- নাটোরে বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সকাল থেকে নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রেখে কর্মবিরতিতে অংশ নেন। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।