
স্থানীয়দের অভিযোগ—প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলছে নদীভাঙন সৃষ্টি করা বালু তোলার মহোৎসব।
সিলেটের সুরমা নদীতে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার নদীতীরবর্তী মানুষের মাঝে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ, কিছু ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে নদীর তলদেশসহ উভয় তীর থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালু তুলছেন, যার ফলে ভয়াবহ নদীভাঙনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অনেক স্থানে ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাও ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
অভিযোগ অনুযায়ী, সিলেট নগর এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি ও তাদের সহযোগীরা একটি ইজারার সুযোগ নিয়ে জকিগঞ্জের নওয়াগাঁও মৌজায় আড়াই একর জায়গায় বালু উত্তোলনের অনুমতি নিলেও বাস্তবে তার বাইরে বিস্তীর্ণ এলাকায় ড্রেজার ও বাল্কহেডের মাধ্যমে প্রতিদিনই বালু তোলা হচ্ছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, কায়স্তগ্রাম থেকে বড়দেশ বাজার পর্যন্ত কয়েকশ একর জায়গাজুড়ে এই কার্যক্রম চলমান।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, নিষিদ্ধ সাকশন ড্রেজারের মাধ্যমে প্রতিদিন একাধিক নৌযানে বালু পরিবহন করে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদীর গতি প্রকৃতি বদলে গিয়ে ভাঙন বাড়ছে। তারা দাবি করেন, এসব বালু বিক্রির অর্থ দেশের বাইরেও পাচার হতে পারে।
কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা গত কয়েক মাসে জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার ও সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর একাধিক স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। তারা জানান, বারবার অভিযোগ করলেও কার্যকর ব্যবস্থা পাওয়া যায়নি। বরং প্রতিবাদ করায় তাদের কয়েকজন হামলার শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ।
সম্প্রতি সিলেটের নবাগত জেলা প্রশাসক জেলার সর্বত্র অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, সুরমায় এখনো সেই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার আলম গণমাধ্যমকে বলেন,সিলেট জেলায় বালু ও পাথর উত্তোলন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিক্রয় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এরপরও কেউ আদেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন,বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে সুরমা নদী এবং এর দুই তীরের অস্তিত্ব চরম হুমকির মুখে পড়বে।