
ফজল উদ্দিন, ছাতক প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের ছাতকের কৈতক হাসপাতাল এলাকায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২০ শয্যার ট্রমা সেন্টার উদ্বোধনের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও চালু হয়নি। সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসা দিতে নির্মিত এ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটি এখন তালাবদ্ধ পড়ে আছে। দূর থেকে আধুনিক ভবন দেখা গেলেও কাছে গেলে মনে হয় যেন পরিত্যক্ত কোনো স্থাপনা—গেটের তালা, ভেতরে লতাপাতা, মাকড়সার জাল আর অবহেলার চিহ্ন।
ভবনে স্থাপন করা ১১টি এসি দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হওয়ার পথে। চিকিৎসা সরঞ্জাম, আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় বিপুল অর্থ ব্যয়ে নির্মিত এ ট্রমা সেন্টারটি চালু হয়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
২০২৩ সালে উদ্বোধন করা হয় সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ট্রমা সেন্টারটি। জেলার স্বাস্থ্যসেবায় নতুন মাত্রা যোগ করার লক্ষ্য থাকলেও দুই বছরেও সেবা দিতে পারেনি এটি। এ সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় বহু মানুষ আহত ও নিহত হয়েছেন; গুরুতর রোগীদের নিতে হয়েছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ বা রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে।
জয়কলস হাইওয়ে থানার ওসি সুমন কুমার চৌধুরী জানান, জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ৩৭টি দুর্ঘটনায় ২৭ জনের মৃত্যু ও ৬৫ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে শান্তিগঞ্জ এলাকায় দুর্ঘটনার হার বেশি।
সুনামগঞ্জ–সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ৬৮ কিলোমিটারজুড়ে আগে কোনো ট্রমা সেন্টার না থাকায় কৈতকে স্থাপিত এ আধুনিক স্থাপনা নিয়ে আশাবাদী ছিলেন শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, দোয়ারা ও ছাতকের মানুষ। কিন্তু উদ্বোধনের দীর্ঘ সময় পরেও কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় হতাশ স্থানীয়রা দ্রুত জনবল নিয়োগ ও সরঞ্জাম সরবরাহ করে ট্রমা সেন্টার চালুর দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, “জনবল না থাকায় ট্রমা সেন্টারটি চালু করা যায়নি। জনবল নিয়োগের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে।”