
বড়লেখা প্রতিনিধি :: ফ্রান্স প্রবাসী নাজিম উদ্দিনকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও পারিবারিক বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। বুধবার স্থানীয় সাংবাদিকদের সামনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নাজিম উদ্দিনের পরিবার বিষয়টি তুলে ধরে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নাজিমের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২২ সালে নাজিম উদ্দিনের বিয়ে হয় তানজিলা আক্তার ছামিয়ার সাথে। এরপর তানজিলার পরিবার— শাশুড়ি আমিনা বেগম, শ্যালক তামিম আহমদ ও তানিসা জান্নাত ইবা— দাবি করেন যে তারা তানজিলাকে যুক্তরাজ্য পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারবেন, যেখান থেকে ফ্রান্সে নেওয়া সহজ হবে। এ প্রয়োজনে তারা মোট ২৭ লাখ টাকা দাবি করেন।
পরিবারের সরল বিশ্বাসে বিভিন্ন সময়ে অর্থ প্রদান করা হয়।
অর্থ প্রদান বিবরণ:
২৮ জানুয়ারি ২০২২: নগদ ৫ লাখ টাকা
০১/০২/২০২২–১৪/০২/২০২৪: ফ্রান্স থেকে আমিনা বেগমের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৩,৪৩,৮০০ টাকা পাঠানো
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩: নগদ ৮,৫৬,২০০ টাকা প্রদান
এ ছাড়া লন্ডন থেকে ফ্রান্সে নেওয়ার সময় নাজিম আরও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করেন। সব মিলিয়ে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, কিছুদিন পর ফ্রান্সে পৌঁছে নাজিম জানতে পারেন তার স্ত্রী তানজিলা আক্তার ছামিয়া তাকে তালাক না দিয়েই তারেক আহমদ নামের এক ব্যক্তির সাথে গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এ সংক্রান্ত কাবিননামা ও ছবি ভুক্তভোগী পরিবারকে দেখানো হয়। নাজিম যখন স্ত্রীর কাছে বিষয়টি জানতে চান, তখন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে ফ্রান্সে ছয় মাসের জেল খাটানো হয় বলে দাবি করেন পরিবার।
পরিবারের অভিযোগ, বিবাদীগণ ইচ্ছাকৃতভাবে সত্য গোপন করে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং প্ররোচিত করে দ্বিতীয় বিয়ে সম্পন্ন করিয়েছেন— যা নাজিম ও তার পরিবারকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
২৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখে টাকা ফেরত চাইতে বড়লেখার হাটবন্দ এলাকায় বিবাদীদের বাড়িতে গেলে তাদের মারধর–হুমকির শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগ করা হয়। বিবাদীরা সব লেনদেন অস্বীকার করেন।
পরিবার জানায়, নিরুপায় হয়ে তারা সম্প্রতি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দণ্ডবিধি ৪০৬/৪২০/৫০৬(২) ধারায় নালিশি মামলা দায়ের করেছেন। তাদের হাতে ব্যাংক স্টেটমেন্ট, দুটি কাবিননামা, পাসপোর্ট, টিকিট ও দ্বিতীয় বিয়ের ছবি—সহ প্রয়োজনীয় সব প্রমাণ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের দাবী করেন,প্রতারক চক্রকে দ্রুত গ্রেপ্তার,প্রতারণার শিকার পরিবারকে নিরাপত্তা প্রদান,হাতিয়ে নেওয়া ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা দ্রুত উদ্ধার।
পরিবার প্রশাসন ও গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করে ন্যায়বিচারের দৃঢ় প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।