
রাইজিংসিলেট- সহানুভূতির গল্প: সেনাসদস্যের ছোঁয়ায় আলোকিত এক জীবন, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী কইতরুন্নেছা পরিবারের কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। কয়েকদিন পর তিনি পৌঁছান মাদারীপুরে এবং আশ্রয় নেন টেকেরহাট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে, যেখানে তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি অস্থায়ী ক্যাম্প ছিল।
সেখানে কর্মরত সৈনিক সৈয়দ কামরুল ইসলাম কলেজের বারান্দায় ভেজা অবস্থায় বসে থাকা এক বৃদ্ধাকে দেখতে পান। তিনি ওই নারীর খোঁজখবর নেন, খাবার দেন এবং তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা করেন। কইতরুন্নেছা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন, তবে নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারছিলেন।
পরিচয় নিশ্চিত করতে সৈয়দ কামরুল ইসলাম তাঁর ছবি ও তথ্য ফেসবুকে শেয়ার করেন। সেই পোস্টের সূত্র ধরে কুলাউড়ার বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন পোস্টটি দেখে দাদিকে চিনতে পারেন এবং কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর সৈয়দ কামরুল ইসলাম তিন দিনের ছুটি পান এবং কইতরুন্নেছাকে নিয়ে কুলাউড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। পরদিন বিকেলে তিনি কইতরুন্নেছাকে তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন। এ সময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দ কামরুল ইসলাম বলেন, “ওই নারী আমাদের ক্যাম্পে না এলেই হয়তো তাঁর সন্ধান পাওয়া যেত না। ফেসবুকের মাধ্যমে দ্রুত সাড়া পেয়েছি। পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে পেরে ভালো লাগছে।”
স্বজন শাহাবুদ্দিন জানান, তাঁর দাদি মাঝেমধ্যে কাউকে না জানিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে যান, তবে এতদিন ধরে ফিরে না আসায় সবাই উদ্বিগ্ন ছিলেন।
কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হেলাল আহমদ বলেন, “সৈনিক কামরুল ইসলামের সহানুভূতিশীল উদ্যোগ ছাড়া এই বৃদ্ধাকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হতো। তাঁর এই মানবিক কাজে আমরা কৃতজ্ঞ।”